তাজমহল দেখবেন? তবে আর কষ্ট করে দিল্লি আগ্রা নয়! নদীয়া গেলেই মিলবে এক নয় জোড়া তাজমহলের (Tajmahal in West bengal) দর্শন। এমনটাই দাবি চাপড়া অঞ্চলের স্থানীয় মানুষের। এবার বাংলায় তাজমহল দেখতে পারবেন, সৌজন্যে তৃনমূল নেতা।
আর এই তাজমহলের পিছনে শাজাহান হলেন চাপড়ার তৃণমূল নেতা রাজীব শেখ (Rajib Sheikh)। নিজের দুই স্ত্রীর জন্য করিমপুর-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কের ধার ঘেঁষেই বানিয়েছেন বিশাল দুই প্রাসাদোপম বাড়ি। যাকে স্থানীয়রা মজা করে বলেন জোড়া তাজমহল। দুটি বাড়িই আগাপাশতলা মার্বেল পাথরে মোড়া। রয়েছে বিশাল হলঘর, আধুনিক রান্নাঘর ও একাধিক ঘর। তার সাথে দুটি বাড়িতেই দামি বিলাসবহুল আসবাবপত্রের ছড়াছড়ি।
এখন এই বিপুল অংকের টাকার উৎস কী? জানা গিয়েছে বাম আমলে রাজীব শেখের বাবা কাংলা শেখ কাজ করতেন পেট্রোলপাম্পের নৈশপ্রহরীর। চাপড়ারই কাঁঠালতলা এলাকায় ছোট্ট পৈতৃক বাড়িও রয়েছে তাদের। এরপরই ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় এলে কপাল চওড়া হয় কাংলা শেখ, রাজীব শেখের। রুকবানুর রহমান তৃণমূলের টিকিটে বিধায়ক হবার পর পরই নজিরবিহীন সম্পত্তি বৃদ্ধি ঘটে রাজীব শেখের।
বিধায়কের সত্যে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে নানা দিক থেকে ক্ষমা হস্তগত করতে থাকেন এই তৃণমূল নেতা। বর্তমানে রাজীব শেখের (Rajib Sheikh) বড় বউ আসমাতারা বেগম চাপড়া ২ পঞ্চায়েত প্রধান। রাজীব ছিলেন চাপড়া ব্লকের সংখ্যালঘু সেলের প্রধান। ও বাবা কাংলা শেখ চাপড়া ২ অঞ্চল প্রধান। যদিও বর্তমানে রাজীব ও কাংলা দুজন কেই সরানো হয়েছে পদ থেকে।
বিধায়ক রুকবানুরের মন্তব্য
এই প্রসঙ্গে বিধায়ক রুকবানুর বলেছেন, তারা রাজীবের আয়ের উৎস হিসাবে জানতেন ঠিকাদারি ব্যবসা। পরে অনৈতিকতা ও রাজীবের (Rajib Sheikh) আয়ের অসঙ্গতি দেখেই তাকে সরানো হয়েছে। স্পষ্টতই এখন দায়ে ঝেড়ে ফেলছে দল। যদিও রাজীবের বক্তব্য এসবই পরিশ্রমের ফল বা পৈতৃক সম্পত্তি। রাজীব দাবি করেছেন পৈতৃক সূত্রে কাংলা শেখ ২২ বিঘা জমির মালিক। যার বাজারদর কোটির ঘরে। এছাড়াও তাদের বহুদিনের পাটের ও ভুসিমালের ব্যবসাও আছে। প্রশ্ন উঠছে তবে নৈশ প্রহরীর কাজ কি কারণে। আর বহুদিন ধরে কাজ করলে, উন্নতিই বা এই ৫-৬ বছরে কেন। মেলেনি সদুত্তর।
আরও পড়ুন জেলার খবর। District News
যদিও স্থানীয়দের মতে রুকবানুরের হাত মাথায় থাকায় এলাকায় রাজীবের ক্ষমতার রথ ছিল অপ্রতিরোধ্য। ঠিকাদারি তো বটেই, ইটভাঁটা ও পাটগুদামের মালিকানা, সুপার মার্কেট ব্যবসার অংশীদারিত্ব সবই ছিল রাজীব – কাংলার হাতে। এখন গোষ্ঠী কোন্দলে যদিও কোনঠাসা বাপছেলে। তবে তৃণমূল নেতাদের নজির বিহীন সম্পত্তি বৃদ্ধির তালিকায় নবতম নাম সংযোজন এই দুই তৃণমূল নেতার দলকে যে বেশ অস্বস্তিতে ফেলেছে, তা বলাই বাহুল্য।